CategoriesHealthy Foods Rice

কেন খাব লাল চাল 

লাল চালে প্রচুর অ্যানথোসায়ানিন নামের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে। এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট লাল রঙের ফলমূল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায়। অ্যানথোসায়ানিন শরীরে প্রদাহ কমায়। অ্যালার্জি কমায়। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্যও সাদা চালের চেয়ে লাল চাল ভালো। তবে তিনবেলা প্লেট ভরে লাল চালের ভাত খেলে কিন্তু হবে না! কাপে মেপে পরিমাণে অল্প, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেটুকু সাদা ভাত খাওয়া উচিত, সেটুকু লাল চালের ভাত খেতে পারেন।

কেন ভালো লাল চাল?

 লাল চালের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে আঁশ থাকে বেশি। আর যেকোনো খাবারে আঁশ থাকলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এতে কোলেস্টেরল কমে। হজমে সাহায্য করে। ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে অন্ত্রের কোষের সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকতে বাধা দেয়। এ ছাড়া লাল চাল সেলেনিয়ামের ভালো উত্স। এই খনিজ দ্রব্যের সামান্য পরিমাণও অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

সাদা চাল বনাম লাল চাল

লাল চালে ভিটামিন বি১, বি৩, বি৬ ও ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস প্রভৃতি খনিজ পদার্থ বেশি মাত্রায় থাকে। শরীরের জন্য এগুলো খুব দরকার। সাদা চাল তৈরির প্রক্রিয়ায় চালের এসব উপাদান অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। আঁশও কমে যায়। এসব বিবেচনায় লাল চাল নিঃসন্দেহে সাদা চালের চেয়ে ভালো।

লাল চালে প্রচুর পরিমাণে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরের প্রয়োজনীয় লোহিত কণিকা ও সেরোটোনিন উৎপাদন করে। এতে বেশি পরিমাণে আয়রন থাকায় খেতে খুব সুস্বাদু নয়। কিন্তু রক্তাল্পতায় ভোগা মানুষের জন্য লাল চাল ওষুধের মতো কাজ করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে বলে লাল চাল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও উপকারী।

 লাল চালে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে। উপাদান দুটি একসঙ্গে হাড় ও দাঁত ভালো রাখে। হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। ম্যাগনেশিয়াম মাইগ্রেন কমায়, রক্তচাপ কমায় ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

লাল চালের অ্যানথোসায়ানিন ত্বকের ভাঁজ কমায়, ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকায় সূর্যের আলোর ক্ষতিকর আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

সতর্কতা:

১. লাল চালে একটা সমস্যা থাকতে পারে যদি সেটা আর্সেনিকপ্রবণ এলাকায় উত্পাদিত হয়। ধানগাছ খুব সহজেই মাটি ও পানি থেকে আর্সেনিক শুষে নেয়। এই আর্সেনিক ধানের খোসা ও কুঁড়াতে বেশি থাকে। ধান থেকে খোসা ছাড়ানোর পর তৈরি লাল চালে আর্সেনিক–দূষণের আশঙ্কা বেশি। চাল সাদা করার সময় লাল চালের কয়েক পরত আবরণ উঠে যায়। ফলে আর্সেনিকের মাত্রা সাদা চালে কম।

২. লাল চালে সামান্য পরিমাণে ক্ষতিকর ফাইটিক অ্যাসিড আছে। এই অ্যাসিড আয়রন ও ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়। ফলে লাল চালের ভাতের সঙ্গে যদি এমন খাবার খাওয়া হয়, যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে, তবে হজমে সমস্যা হতে পারে। তাই লাল চালের ভাত খাওয়ার সময় অধিক আয়রন ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। 

CategoriesHealthy Foods Rice

ঢেকি নাকি চাতাল..!

চাতালের চাল ও ঢেকিছাটা চালের মধ্যে পার্থক্য!

ঢেঁকিতে চাল ভাঙ্গানোর মূল কারন হচ্ছে যেনো চালের ফাইবার রাখা যায়। আমাদের চাতালের চালে ফাইবার রেখে ভাঙ্গানো হয়। ঢেঁকিতে খরচ বেশি হওয়াতে দাম অনেক বেশি পরে যায়, তাই ঢেঁকির প্রচলন অনেকটা উঠে গেছে। বর্তমানে তাই অনেকেই চাতালের চাল কে ঢেঁকিছাটা চাল বলে বিক্রি করে থাকে।

লাল চাল কেনো খাবেন?

লাল চাউলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ব্রাউন রাইসে স্টার্চ ও ফাইবার রয়েছে। এই লাল চাল রক্তনালীতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকি কমায়, হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায়, রক্তের চর্বির মাত্রা ও সুগারের মাত্রা কমায়।

আমাদের ফাইবার সমৃদ্ধ চাতালের চাউল সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি প্রস্তুত। চাতালের শুঁকানো, হাস্কিং মিলের ২নং হলারে ভাঙানো, তাই খেতে খুবই সুস্বাদু। পলিশ ও রংবিহীন। সরাসারি সিরাজগঞ্জ হতে সংগৃহীত।

CategoriesHealthy Foods Tips & Tricks

রমজানের সেরা রেসিপি

চলুন দেখে নেই মজাদার ও পুষ্টিকর এ খাবারগুলো তৈরির প্রস্তুত প্রনালী। 

* দই – চিঁড়া 

উপকরনঃ মিষ্টি দই ১ কাপ, চিঁড়া আধা কাপ, পাকা কলা ১টি, পাকা আম ১ কাপ, লবণ ১ চিমটি, চিনি বা মধু স্বাদমতো।

প্রস্তুত প্রণালীঃ

১. প্রথমে চিঁড়া ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

২. তারপর একটি বাটিতে দই ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিন।

৩. ফেটানো দইয়ে চিঁড়া মেখে এক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন।

৪. স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

৫. পরিবেশনের ঠিক ৫ – ১০ মিনিট আগে আম ও কলার সঙ্গে দই-চিড়া চামচ দিয়ে মেশাতে হবে।

৬. তারপর আম ও কলার টুকরা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

৭. চাইলে আপনার ইচ্ছামতো অন্য ফল দিয়েও সাজিয়ে নিতে পারেন।

উপকারীতাঃ সারাদিনের পানির চাহিদা মিটানোর সাথে সাথে ক্ষুধা মিটিয়ে শরীরকে তরতাজা করতে এ খাবারটি বেশ কার্যকর। সেই সাথে বাড়াবে হজম প্রক্রিয়া ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া পেট ঠান্ডাকারী খাবার হিসেবে দই – চিঁড়ার জুড়ি নেই। চিঁড়ায় পটাসিয়াম এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারি।

* ফ্রুট কাস্টার্ড

উপকরণঃ দুধ ১ লিটার, ডিমের কুসুম ২টি, কাস্টার্ড পাউডার ৩ টেবিল চামচ, চিনি স্বাদমতো, কিসমিস ২ টেবিল চামচ, কাঠ বাদাম ২ টেবিল চামচ, ফল (কলা, আম, আপেল, আঙুর, চেরি ফল,আনার, স্ট্রবেরি ইত্যাদি) কিউব করে কাটা প্রায় ২ কাপ, খাস ফুডের আজওয়া খেজুর কাটা ১/২ কাপ।

প্রস্তুত প্রনালীঃ

১. প্রথমে ডিমের কুসুম দু’টি একটি বাটিতে নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। 

২. এবার কাস্টার্ড পাউডার দিয়ে ভালো করে মেশান এবং নরম মিশ্রণ তৈরি করুন।

৩. একটি পাত্রে দুধ নিয়ে অল্প আচেঁ জাল দিন।

৪. দুধ একটু ঘন হয়ে এলে চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন।

৫. অল্প আঁচে ডিম এবং কাস্টার্ডের মিশ্রণটি দুধের সঙ্গে ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন।

৬. মিশ্রণটি একদম অল্প আঁচে রান্না করতে হবে এবং বিরতিহীনভাবে নাড়তে হবে যাতে কাস্টার্ড জমে না যায়।

৭. কাস্টার্ড হালকা ফুটে উঠলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।

৮. তারপর ফ্রিজে রেখে পছন্দমতো ফল দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ফ্রুট কাস্টার্ড।    

উপকারীতাঃ অনেকের শুধু শুধু ফল খেতে ভালো লাগে না, ফ্রুটস কাস্টার্ড তাদের ক্ষেত্রে আনবে বৈচিত্র্য। নানান স্বাদের ও গুনের ফলে ভরপুর এ কাস্টার্ড সারাদিনের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। শরীরকে রাখবে ফিট। তাই চেষ্টা করবেন এ রমজানে প্রতিদিনের খাবার টেবিলে এটিকে রাখতে। 

* চিকেন সালাদ

উপকরণঃ হাড় ছাড়া মুরগির মাংস ১ কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, পাপরিকা পাউডার ১ চা চামচ / লাল মরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, গোল মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, অরিগানো ১/২ চা চামচ, শুকনা মরিচ টালা গুঁড়ো অল্প, টমেটো কেচাপ ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমত, তেল ১ টেবিল চামচ।

সালাদের জন্য যা লাগবেঃ শসা টুকরা / কুচি , গাজর, টমেটো ,লেটুস কুচি এবং ভাঁজা মচমচে নুডুলস, লেবুর রস, অল্প অলিভ ওয়েল।

প্রস্তত প্রণালীঃ

১. তেল ছাড়া মাংসের সব উপকরন মাংসের সাথে মিশিয়ে মেরিনেট করে রাখুন ১০ মিনিট। এক ঘণ্টা হলে আরো ভালো।

২. প্রথমে প্যানে তেল দিয়ে তেল গরম হলে মেরিনেট করে রাখা মাংস দিয়ে মিডিয়াম আঁচে রান্না করুন। ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন।

৩. এখন সালাদের জন্য কেটে রাখা শসা, গাজর, টমেটো ,লেটুস কুচিতে অল্প লবণ, ভাজা মচমচে নুডুলস, লেবুর রস আর অল্প অলিভ ওয়েল দিয়ে মেখে নিন। (লবণটা খেয়াল রাখতে হবে কারন রান্না করা মাংসতেও লবণ দেয়া আছে)।

৪. প্লেটে পরিবেশনের সময় আগে মাখানো সালাদ সাজিয়ে নিন। এর উপর রান্না করা মাংস ছড়িয়ে দিন।

৫. চাইলে কিছু ভাজা বাদাম উপরে ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। এতে পরিবেশনটা দেখতেও ভালো লাগবে।

উপকারীতাঃ গরমে সব ধরনের সালাদই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আর চিকেন সালাদ অত্যাধিক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাবার। এর আমিষ আপনার পেশির শক্তি বাড়িয়ে তুলবে এবং তাজা সবজি জোগান দেবে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের। এ গরমের রমজানে এই সালাদ আপনার শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।

CategoriesLifestyle Tips & Tricks

রমজানে শরীর চাঙ্গা রাখবে যে শরবত

পবিত্র সিয়াম সাধনার এ রমজান মাস এবার ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দীর্ঘদিনের সময়ে পড়েছে। তাছাড়া রোজা এবার গরমের মৌসুমে। ফলে সারাদিনের রোজায় ক্লান্ত হয়ে পড়বেন প্রায় সকলেই। প্রচণ্ড এ গরমে রোজা রাখার পর সারা দিনের ক্লান্তি কাটাতে ইফতারে চাই এমন কিছু, যা তেষ্টা মেটাবে এবং দূর করবে ক্লান্তি। এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত সারা দিনের ক্লান্তি মুছে শরীরকে চাঙা করতেই শুধু ভূমিকা রাখে না, একই সঙ্গে অবসাদ ঘুচিয়ে দিতেও বেশ কার্যকরী। তাই ইফতারে সবার চাই স্বাস্থ্যকর এক গ্লাস শরবত। 

তাই চলুন চটপট কিছু সহজ, সুস্বাদু শরবত তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ, প্রস্তুত প্রনালী ও উপকারিতা দেখে নেয়া যাক। 

১. পুদিনার শরবত

উপকরণঃ পুদিনা পাতা বাটা ২ চা চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, ১ চিমটি বিট লবন, স্বাদমতো লবন এবং পানি ১ গ্লাস।

প্রণালিঃ প্রথমে পুদিনা পাতা ধুয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার পানির সঙ্গে পুদিনা পাতা বাটা, চিনি ভালো করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। চিনিতে সমস্যা হলে এর পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করতে পারেন বা চিনি বাদ দিয়ে লবণ ও ১ চিমটি বিটলবণ মিশিয়ে নিন। সবার শেষে লেবুর রস দিয়ে দিন।

উপকারিতাঃ এ শরবত পানে অনেক বেশি সতেজ অনুভত হয়। পুদিনাপাতা ও লেবুর রসের মিশ্রণ শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরনের সাথে সাথে পেটের যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে খুব দ্রুত। 

২. দুধ তোকমার শরবত

উপকরণঃ তোকমার দানা ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, বরফকুচি ২ টেবিল চামচ এবং রুহ-আফজা ১/২ চা চামচ।

প্রণালিঃ প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে নিন। শরবত বানানোর আধাঘণ্টা আগে তোকমার দানা ১/২ গ্লাস খাবার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ভিজিয়ে রাখা তোকমার দানা ঠান্ডা দুধে মিশিয়ে নিন। চিনি ও রুহ-আফজা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। বরফকুচি মিশিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিন। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

উপকারিতাঃ এ গরমে দেহের তাপ কমাতে এ শরবত বিশেষ সহায়ক। শুধু ইফতার নয়, সেহেরিতেও খেতে পারেন কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা বাড়তি ক্ষুধা দূর করে এবং পেট দীর্ঘক্ষণ পরিপূর্ণ থাকার অনুভূতি দেয়। দেহের ওজন কমাতে এ বীজের জুড়ি নেই। তোকমার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এর নানা উপাদান দেহের চর্বি কমাতে সহায়তা করে। তাই এ রমজানে প্রতিদিনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হতে পারে এ শরবতটি।

৩. আমের শরবত

উপকরণঃ কাঁচা আম কুচি এককাপ, চিনি স্বাদমতো, পানি আধাকাপ, বিট লবণ এক চিমটি, পরিমাণমতো বরফ কুচি।

প্রস্তুত প্রণালীঃ আম ভালোভাবে ধুয়ে কেটে টুকরো করে নিন। এবার ব্লেন্ডারে একে একে আম, পরিমানমতো বিট লবন, কাচামরিচ, চিনি ও পানি দিন। সবকিছু একসাথে ভালোকরে ব্লেন্ড করুন ২ মিনিট। হয়ে গেলো দারুন স্বাদের কাঁচা আমের শরবত। গ্লাসে ঢেলে বরফ টুকরো দিয়ে পরিবেশন করুন।

উপকারিতাঃ গরমের প্রধান প্রশান্তি বলা চলে আমকে। প্রচন্ড সুস্বাদু আমের শরবত ইফতারে পান করলে এক নিমিষে জুড়িয়ে যাবে আপনার মনপ্রাণ। ফাইবার সমৃদ্ধ এ ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ সহায়ক। ভিটামিন-সি যুক্ত হওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগ নিরাময়ে উপকারী। অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণে সাহায্যকারী এ শরবত পানে শরীর নানাবিধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে আশা করা যায়।

৪. তেঁতুলের শরবত

উপকরণঃ তেঁতুল, বিট লবণ, চিনি, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনিয়া পাতা কুচি, শুকনা মরিচের গুড়া, ঠাণ্ডা পানি।

প্রস্তুত প্রণালীঃ  প্রথমে তেঁতুল থেকে বিচি আলাদা করে একটি পাত্রে তেঁতুল গুলে নিন। গোলানো তেঁতুলের সঙ্গে পরিমানমতো ঠাণ্ডা পানি মিশান। এবার তেঁতুলের সঙ্গে একে একে পরিমানমতো চিনি, বিট লবণ, টেলে রাখা শুকনা মরিচের গুড়া, কাঁচা মরিচ কুচি ও ধনিয়া পাতা কুচি দিন এবং নেড়ে ১০ মিনিট রাখুন। তেঁতুলের মিশ্রনটি অন্য একটি পাত্রে ছাকনি দিয়ে ছেকে নিন। গ্লাসে ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

উপকারিতাঃ গরমে তেঁতুলের শরবত দেবে অতুলনীয় প্রশান্তি। তেঁতুল রক্তের কোলস্টেরল কমায়। তাই এ রমজানে পেটে গ্যাস হলে তেঁতুলের শরবত অনেকটা সাহায্য করবে। তেঁতুলে থাকা ভিটামিন-মিনারেলস স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।

এছাড়া তরমুজের শরবত, আদা লেবুর শরবত, শসার শরবত, আনারসের শরবত, জামের শরবত, পুদিনা পেস্তার লাচ্ছি শরীরে সতেজতা আনতে সহেয়তা করে।

CategoriesUncategorized

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

মাহে রমজান অন্য সকল মাস অপেক্ষা উত্তম ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ মাসের অর্জিত জ্ঞান অন্য সকল মাসে প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের জীবন সুন্দর ও আলোকিত হয়ে ওঠে। রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের বার্তা নিয়ে আসা রমজান নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাপূর্ণ। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি।

আল্লাহপাক রোজা আমাদের ওপর ফরজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন – “হে মু’মিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের উপর। যাতে করে তোমরা তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জন করতে পারো। (সূরা বাক্বারা, আয়াত : ১৮৩)।”

রমজান মাস অত্যন্ত মহিমান্বিত মাস কারন এ মাসেই পবিত্র কোরআন মাজীদ নাজিল হয়েছে। আল কোরআনের ভাষায় “রমজান মাস এমন এক মাস, এ মাসেই কোরআন নাজিল হয়েছে, যা সমগ্র মানবজাতির জন্যে দিশারী, সত্যপথের স্পষ্ট পথনির্দেশকারী এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরুপণকারী। (সূরা বাক্বারা, আয়াত : ১৮৫)”

এ মাসেই আমরা লাইলাতুল কদর পাই; যা সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। আমরা বিশ্বাসী এ রাতে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সম্মান বৃদ্ধি করে দিবেন এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই এ রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত।

সিয়াম সাধনার অর্থ – সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্তের পর পর্যন্ত সকল ধরনের পানাহার, পাপাচার এবং খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত ও সংযত রাখা। এ পবিত্র মাস মানুষকে সকল রকম গর্হিত ও অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখে এবং সকলকে সাধ্যমত ইবাদাত বন্দেগি করার জন্য উৎসাহিত করে। কারন রোজা সম্পর্কে আল্লাহর স্বয়ং এরশাদ করেছেন: “রোজা আমার জন্যে এবং আমিই তার পুরস্কার দান করবো। ” (সুবহানাল্লাহ!) 

প্রকৃতপক্ষে রমজান হলো পূর্বের সকল গুনাহর জন্য ক্ষমা চেয়ে সাচ্চা মুসলমান হয়ে জীবনযাপনের প্রতিজ্ঞা করার মাস। এ মাসের সময়গুলো খুব বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা উচিত। ফরজ নামাজ ও রোজা, ফরজ নামাজের পাশাপাশি তারাবিহ পড়া, সেহরির আগে তাহাজ্জুদ পড়া, যথাসম্ভব জিকির ও কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করে সময় কাটানো উচিত। সেই সাথে যথাসম্ভব দান সদকা করা, আশেপাশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের হক আদায় করা বাঞ্ছনীয়। অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, অন্যের হক খাওয়া, সুদ ও জুয়াসহ সকল প্রকার হারাম কাজ থেকে তো সারা বছরই বেঁচে থাকা ফরজ, রমজান মাসে এর অপরিহার্যতা আরও বেড়ে যায়। কারন বরকতপূর্ণ সময়ের গুনাহর কাজ অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক হয়ে পড়তে পারে। তাই আমরা সবসময় প্রার্থনা করি আমাদের সবার জীবনে যেন রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সমান ভাবে ছড়িয়ে পড়ুক।

আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে হেফাজত করুন, নেক কাজের তৌফিক দেন, সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার দৃঢ়তা দেন। আমাদের ঈমানকে মজবুত করার সুযোগ দেন। আমিন!

CategoriesDairy Items

ঘি কেন খাবেন..!

দুগ্ধ ভাণ্ডার খ্যাত পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে খাঁটি দুধে তৈরি ছানা ও ঘি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন কানাডা, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহরাইন, দুবাই, কুয়েতসহ বিশ্বের ১৫টি দেশে রফতানি হচ্ছে। ছানা ও ঘি বিদেশে রফতানি করে প্রতি বছর প্রায় ৩০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। 

ঘি কে মূলত আয়ুর্বেদ ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঘি তে থাকা চর্বি লিভারকে সুস্থ রাখে। ফলে শরীরও থাকে সুস্থ। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি পেশি সুগঠিত রাখতে ঘি কার্যকর। এ ছাড়া শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে ঘি। প্রতিদিন সকালে এক বা দুই চা-চামচ ঘি খাওয়া যেতে পারে। এরপর গ্রিন টি বা সাধারণ চা ও কফি খেলে উপকার পাওয়া যায়।

ঘি অবশ্য অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো। যাঁদের কোলস্টেরলের সমস্যা আছে তাঁদের ঘি এড়িয়ে চলা উচিত।

প্রতিদিন কেন এক চামচ ঘি খাবেন: 

১. ত্বকের শুষ্কতা দূর করে তা আর্দ্র রাখে। 

২. ভিটামিন এ থাকায় এটি চোখের জন্য ভালো। গ্লুকোমা রোগীদের জন্য উপকারী। এটি চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 

৩. ঘি খেলে যে হরমোন নিঃসরণ হয়, এতে শরীরের সন্ধিগুলো ঠিক থাকে। 

৪. এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বলে অন্য খাবার থেকে ভিটামিন ও খনিজ শোষণ করে শরীরকে রোগ প্রতিরোধে সক্ষম করে তোলে। 

৫. পোড়া ক্ষত সারাতে কাজ করে ঘি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আছে ঘি খেলে মস্তিষ্কের ধার বাড়ে ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

desi duck and chiken eggCategoriesHealthy Foods

দেশি ডিম কেন খাবেন? এবং ডিমের ৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা

ফার্মের ডিমের তুলনায় দেশি মুুরগীর ডিম অধিক পুষ্টি সম্পন্ন হয়ে থাকে। দেশি মুরগীর ডিমের বিশেষ বৈশিষ্ট হলো এটি প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত, যাতে ক্ষতিকর কোন চর্বি থাকে না।

এ কথা হলফ করে বলা যায় যে, ডিম খাওয়ার কথা উঠলে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকজন মুরগির ডিম-ই বেছে নেবেন। বিশেষ করে হাঁসের ডিমের সঙ্গে যদি তুলনা করা যায় তাহলে মুরগির ডিম-ই বেশি পছন্দ। এর কারণ, প্রচলিত ধারণা হচ্ছে মুরগির ডিমে বেশি পুষ্টি থাকে।

আজকাল অনেকেই ডিম খান না। কেউ ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে, কেউ আবার রক্তে চর্বির পরিমান কম রাখতে, কেউ আবার হৃদরোগকে ভয় পেয়ে। কিন্তু আসলেই কি ডিম এগুলো বাড়ায়? বরং চিকিৎসকেরা আজকাল বলেন উল্টো কথা। তারা বলেন , সকালে নাস্তায় একটি ডিম মাসে প্রায় ৩ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমাতে পারে।

সহজলভ্য পুষ্টির উত্স হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। তাই বাড়িতে বা রেস্তোরাঁয় সকাল-বিকেলের নাশতাতেই হোক কিংবা দুপুর-রাতের খাবারে ডিমের একটা মেন্যু ঘুরেফিরে আসেই। আর ব্যাচেলরদের জীবনে সহজে রান্নার সহজ মেন্যু হিসেবে ডিম তো প্রায় ‘জাতীয় খাদ্য’ই বটে!

ডিমের কুসুম ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি-এর খুবই ভালো উত্স। ভিটামিন-এ ত্বকের জন্য ভালো। ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি জোগায়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং মাংসপেশির গঠনে সহায়ক। এ ছাড়া গর্ভধারণের জন্যও ডিমের কুসুম খাওয়া উপকারী। ডিমের কুসুমে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোনের উত্পাদন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল ধারণ করার ক্ষমতা বাড়ায়।

ডিমের ৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা:

সবারই পছন্দের খাবার হল ডিম। সকালের নাস্তায় ডিম ছাড়া যেন নাস্তাই করা হয় না। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ডিম খেতে ভালবাসেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। ডিম সেদ্ধ, ডিম পোঁচ, অথবা ডিম দিয়ে যে কোন রান্না খুবই জনপ্রিয় বিশ্বজুড়ে।

আপনি হয়তো জানেন যে ডিম আমাদের দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী, কিন্তু কীভাবে আপনার উপকার করে এই ডিম? জেনে নিই উপকারিতা গুলো সম্পর্কে।

মস্তিষ্কের জন্য উপকারিঃ

ডিমে আছে প্রচুর পরিমানে কলিন যা নিউরোট্র্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে। ডিম আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া ডিমের কুসুমে আছে ফলেট উপাদান যা আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে স্নায়ু কোষের রক্ষণাবেক্ষণ করে।

দেহের হাড় মজবুত করেঃ

ডিমে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি যা আমাদের দেহের ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে থাকে এবং ডিমে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতি অস্টিওপরোসিস বন্ধ রাখে এবং দেহের হাড় মজবুত হতে সাহায্য করে।

দেহের ওজন নিয়ন্ত্রন করেঃ

আমাদের দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে ডিমের উপকারিতা অনেক। যারা পেশির ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাদের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম উপযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিম আমাদের দেহে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগাকে কমিয়ে দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

নখ ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করঃ

ডিমে আছে সালফার সমৃদ্ধ অ্যামিনো অ্যাসিড যা আমাদের হাতের নখের স্বাস্থ্যই শুধু উন্নত করেনা আমাদের চুলের স্বাস্থ্য মজবুত করে ও আকর্ষণীয় করে তুলে। ডিমের অন্যান্য খনিজ পদার্থ সেলেনিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক দেহের নখ ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সহযোগীতা করে।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ

ডিমের অবস্থিত লুটিন ও যেক্সানথিন এই দুটি ক্যারটিনয়েড আমাদের চোখের সুস্থ দৃষ্টি নির্ধারণে সাহায্য করে। ডিমের এই উপাদান গুলো আমাদের চোখের ছানি, মেকুলার পতন ও সূর্যের বেগুনী রশ্মি থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করে।

স্তনের ক্যানসার রোধ করেঃ

গবেষণার পরামর্শ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে ৬ টি করে ডিম খেলে স্তনে ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা ৪০% কমে যায়।

ডিম সহজেই হজম হয়ঃ

ডিম খুব দ্রুত হজম হয়ে যায় আমাদের দেহে। ডিম আপনি যেভাবেই খান না কেন এটি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।