ফার্মের ডিমের তুলনায় দেশি মুুরগীর ডিম অধিক পুষ্টি সম্পন্ন হয়ে থাকে। দেশি মুরগীর ডিমের বিশেষ বৈশিষ্ট হলো এটি প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত, যাতে ক্ষতিকর কোন চর্বি থাকে না।
এ কথা হলফ করে বলা যায় যে, ডিম খাওয়ার কথা উঠলে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকজন মুরগির ডিম-ই বেছে নেবেন। বিশেষ করে হাঁসের ডিমের সঙ্গে যদি তুলনা করা যায় তাহলে মুরগির ডিম-ই বেশি পছন্দ। এর কারণ, প্রচলিত ধারণা হচ্ছে মুরগির ডিমে বেশি পুষ্টি থাকে।
আজকাল অনেকেই ডিম খান না। কেউ ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে, কেউ আবার রক্তে চর্বির পরিমান কম রাখতে, কেউ আবার হৃদরোগকে ভয় পেয়ে। কিন্তু আসলেই কি ডিম এগুলো বাড়ায়? বরং চিকিৎসকেরা আজকাল বলেন উল্টো কথা। তারা বলেন , সকালে নাস্তায় একটি ডিম মাসে প্রায় ৩ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমাতে পারে।
সহজলভ্য পুষ্টির উত্স হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। তাই বাড়িতে বা রেস্তোরাঁয় সকাল-বিকেলের নাশতাতেই হোক কিংবা দুপুর-রাতের খাবারে ডিমের একটা মেন্যু ঘুরেফিরে আসেই। আর ব্যাচেলরদের জীবনে সহজে রান্নার সহজ মেন্যু হিসেবে ডিম তো প্রায় ‘জাতীয় খাদ্য’ই বটে!
ডিমের কুসুম ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি-এর খুবই ভালো উত্স। ভিটামিন-এ ত্বকের জন্য ভালো। ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি জোগায়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং মাংসপেশির গঠনে সহায়ক। এ ছাড়া গর্ভধারণের জন্যও ডিমের কুসুম খাওয়া উপকারী। ডিমের কুসুমে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোনের উত্পাদন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল ধারণ করার ক্ষমতা বাড়ায়।
ডিমের ৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা:
সবারই পছন্দের খাবার হল ডিম। সকালের নাস্তায় ডিম ছাড়া যেন নাস্তাই করা হয় না। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ডিম খেতে ভালবাসেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। ডিম সেদ্ধ, ডিম পোঁচ, অথবা ডিম দিয়ে যে কোন রান্না খুবই জনপ্রিয় বিশ্বজুড়ে।
আপনি হয়তো জানেন যে ডিম আমাদের দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী, কিন্তু কীভাবে আপনার উপকার করে এই ডিম? জেনে নিই উপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
মস্তিষ্কের জন্য উপকারিঃ
ডিমে আছে প্রচুর পরিমানে কলিন যা নিউরোট্র্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে। ডিম আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া ডিমের কুসুমে আছে ফলেট উপাদান যা আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে স্নায়ু কোষের রক্ষণাবেক্ষণ করে।
দেহের হাড় মজবুত করেঃ
ডিমে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি যা আমাদের দেহের ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে থাকে এবং ডিমে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতি অস্টিওপরোসিস বন্ধ রাখে এবং দেহের হাড় মজবুত হতে সাহায্য করে।
দেহের ওজন নিয়ন্ত্রন করেঃ
আমাদের দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে ডিমের উপকারিতা অনেক। যারা পেশির ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাদের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম উপযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিম আমাদের দেহে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগাকে কমিয়ে দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
নখ ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করঃ
ডিমে আছে সালফার সমৃদ্ধ অ্যামিনো অ্যাসিড যা আমাদের হাতের নখের স্বাস্থ্যই শুধু উন্নত করেনা আমাদের চুলের স্বাস্থ্য মজবুত করে ও আকর্ষণীয় করে তুলে। ডিমের অন্যান্য খনিজ পদার্থ সেলেনিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক দেহের নখ ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সহযোগীতা করে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ
ডিমের অবস্থিত লুটিন ও যেক্সানথিন এই দুটি ক্যারটিনয়েড আমাদের চোখের সুস্থ দৃষ্টি নির্ধারণে সাহায্য করে। ডিমের এই উপাদান গুলো আমাদের চোখের ছানি, মেকুলার পতন ও সূর্যের বেগুনী রশ্মি থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করে।
স্তনের ক্যানসার রোধ করেঃ
গবেষণার পরামর্শ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে ৬ টি করে ডিম খেলে স্তনে ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা ৪০% কমে যায়।
ডিম সহজেই হজম হয়ঃ
ডিম খুব দ্রুত হজম হয়ে যায় আমাদের দেহে। ডিম আপনি যেভাবেই খান না কেন এটি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।